শিপন রবি দাস
১৯০১ সালের ২৮ জুলাই কোলকাতার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মনীন্দ্রকুমার সিংহ। তার পিতা ছিলেন কালী কুমার সিংহ। মনীন্দ্রকুমার সিংহের পিতার মৃত্যুর পর তারঁ মা সরলা দেবী সাত বছর বয়সী মনীন্দ্রকুমার সিংহকে নিয়ে তৎকালীন ময়মনসিংহ এর (বর্তমান নেত্রকোণা) সুসং দুর্গাপুরে চলে আসেন।
এখানেই তিনি বেড়ে উঠেন আলোকবর্তিকা হিসেবে! নেত্রকোণার সুসং-দুর্গাপুরের সবুজ সোনালী গ্রাম থেকে উঠে-আসা রাজনৈতিক অঙ্গনের সংগ্রামী কর্মী সেই মনীন্দ্রকুমার সিংহ আজ আন্তর্জাতিক মহলে কমেরড মণি সিংহ নামে একজন সাম্যবাদী নেতা হিসেবে সম্মানিত। কমরেড শব্দটি মূলতঃ ফরাসি শব্দ যার বাংলা অর্থ হচ্ছে বন্ধু বা সাথী!
১৯২১ সালে মাত্র বিশ বছর বয়সে কমরেড মণি সিংহ মহাত্মা গান্ধীর ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন। এ সময় তিনি তাঁর ছদ্মনাম রাখেন আজাদ । মানুষের মুক্তির জন্য শোষণমুক্ত সমাজ সংস্কৃতি গড়ার লক্ষ্যে একের পর এক আন্দোলন চালিয়ে গেছেন এই মহানায়ক কমরেড মণি সিংহ।
তিনি ১৯২৫ সালে মার্কসবাদ-লেনিনবাদকে আদর্শরূপে গ্রহণ করেন এবং ১৯২৮ সালে বাংলাদেশে কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী হিসেবে সার্বক্ষণিক নিজেকে বিপ্লবী কর্মকান্ডে উৎসর্গ করেন। এই মহান নেতা পর্যায়ক্রমে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, টংক আন্দোলন সহ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন প্রবাসী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা হিসেবে ভূমিকা পালন করেন।
কমরেড মণি সিংহ ১৯৯০ সালের ৩১শে ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। সেই দিনটিকে ঘিরে প্রতি বছর নেত্রকোণার সুসং দুর্গাপুরে কমরেড মণি সিংহ স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী স্মরণ আয়োজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় এবং সাতদিন ব্যাপি কমরেড মণি সিংহ মেলাও উদযাপিত হয়ে থাকে।