বাসস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বহুল কাঙ্খিত মেট্রোরেল পরিষেবার দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্বোধন করেছেন। এর ফলে মেট্রোরেল এখন রাজধানীর উত্তরাকে মতিঝিলের সাথে সংযুক্ত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে আগারগাঁও স্টেশনে সবুজ পতাকা নেড়ে মতিঝিল স্টেশন অভিমুখে মেট্রোট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন এবং সেখানে তিনি সবুজ পতাকাতেও স্বাক্ষর করেন।পরে তিনি ফিতা কেটে ট্রেনে উঠে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে মতিঝিলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।
উদ্বোধনী যাত্রায় তার অনুভূতি ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার মেট্রোরেল চালুর এই উদ্যোগ নিয়েছে যাতে সবাই সহজে যাতায়াত করতে পারে, কাজের সময় বাঁচাতে পারে, যানজট থেকে মুক্তি পেতে পারে এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে।
"আজ, আমরা উত্তরা এবং মতিঝিলের মধ্যে মেট্রোরেল চলাচলের সূচনা হওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত, ‘তিনি বলেন, "আমরা এটি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত প্রসারিত করব।’প্রধানমন্ত্রী জাপান, জাইকা, উন্নয়ন সহযোগী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি মেট্রোরেল কাজের সঙ্গে জড়িত সকল ব্যক্তি ও শ্রমিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ট্রেনটি মতিঝিল স্টেশনে পৌঁছায় বেলা ৩.০৬ মিনিটে।
এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগারগাঁও স্টেশনে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
ট্রেনে চড়ার আগে প্রধানমন্ত্রী আগারগাঁও স্টেশনে ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট সংগ্রহ করেন।মতিঝিল স্টেশনে, তিনি এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) নির্মাণ কাজেরও উদ্বোধন করেন, যা হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা হয়ে গাবতলী, মিরপুর-১০, গুলশান পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার লাইন হবে। ৪১,২৩৯ কোটি টাকার প্রকল্পের সময়সীমা হল ২০২৮।
পাশাপাশি তিনি আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেল সার্ভিস এবং এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) নির্মাণ কাজের দুটি নামের ফলক উন্মোচন করেন।
এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) হল ছয়টি পরিকল্পিত মেট্রো লাইনের তৃতীয়, সরকার যানজট ও দূষণ কমাতে ঢাকা ও এর সংলগ্ন এলাকায় ১৪০ কিলোমিটার নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে যাচ্ছে।এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রো রেলের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আগারগাঁও-মতিঝিল অংশে তিনটি স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল সেকশনের দৈর্ঘ্য ৮.৭২ কিলোমিটার। ফার্মগেট-সচিবালয়-মতিঝিল স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে।
উত্তরা-মতিঝিল রুটে ৫ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মেট্রো চলাচল করবে।
সকাল সাড়ে ১১টার পর মতিঝিল-আগারগাঁও রুটে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে এবং উত্তরা-আগারগাঁও সেকশনে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে।
জনগণের সুবিধার কথা বিবেচনা করে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.১৬ কিলোমিটার পথ বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত অংশ ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে।
প্রতিটি ট্রেন ২,৩০০ যাত্রী নিয়ে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কমে যাবে।আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাজধানীর ওপর চাপ কমাতে নানা উদ্যোগ নেয়। যানজট নিরসনে রাজধানীজুড়ে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে প্রকল্পের বিবরণে জানা গেছে।
মেট্রো রেল প্রতি ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী এবং প্রতিদিন ৫ লক্ষ যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে এবং প্রতি চার মিনিটে প্রতিটি স্টেশনে একটি ট্রেন আসবে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মেট্রোরেল নির্মাণ করছে এবং প্রকল্পে সহজ শতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। জাইকা প্রকল্পের জন্য ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ খান
নির্বাহী সম্পাদক : আল মাহমুদ খান তূর্য