1. admin@bongojournal24.com : admin :
বাংলা লোক সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার!! আল মাহমুদ খান তূর্য!! - বঙ্গ জার্নাল
সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কথিত সাংবাদিক মামুনের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে দুর্গাপুরে মানববন্ধন দুর্গাপুরে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করলো সন্ত্রাসীরা নিদারাবাদ ইউনিয়ন স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক নিয়োগে কারসাজি ও অনিয়মের অভিযোগ ইত্যাদির নেত্রকোণা পর্ব প্রচার হবে ২৯ সেপ্টেম্বর বিটিভিতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ড্রেজার মেশিন জব্দ, আটক-৭ কলমাকান্দায় অসহায়ের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ কলমাকান্দায় ইউনিয়ন যুবলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা কলমাকান্দায় জাতীয় স্থানীয় সরকার উন্নয়ন মেলার সমাপনী ও পুরুষ্কার বিতরন দুর্গাপুরে ৩ দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন গাইবান্ধায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গুলি ও বন্দুকসহ ৬ ডাকাত গ্রেফতার

বাংলা লোক সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার!! আল মাহমুদ খান তূর্য!!

  • প্রকাশিত : সোমবার, ৪ অক্টোবর, ২০২১
  • ১৯৩ বার পঠিত

বাংলা শিশু সাহিত্যের ধারায় সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাম দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার। একাধারে লোক সাহিত্যের সংগ্রাহক, ছড়াকার,চিত্রশিল্পী, দারুশিল্পী এবং কিশোর কথাকার হিসেবেও দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার বিশেষ অবদান রেখে গেছেন।বস্তুত তার হাত ধরেই বাঙালি কিশোর শিক্ষার্থীরা সাহিত্যের অন্তলোকে প্রবেশ করে -প্রথম শব্দ শিল্পের আশ্বাদ লাভ করে।
প্রধানত ‘ঠাকুরমার ঝুলি ‘ শীর্ষক অবিস্মরণীয় গ্রন্থের জন্যই বাঙালি পাঠক সমাজে তিনি সমাধিক পরিচিত।শিশু সাহিত্যে তার ভুমিকার কথা স্মরণ করে এ কথা আজ নি:সন্দেহে বলা যায় যে
হাজার বছরের বাংলাদেশ যে সব সূর্য-সন্তান বাঙালি জাতিকে উপহার দিয়েছে, সাভারের দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার তাদের মধ্যে অন্যতম।

১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ এপ্রিল (১২৮৪ বঙ্গাব্দের ২ বৈশাখ ) ঢাকা জেলার অন্তর্গত সাভারের উলাইল গ্রামের সম্ভ্রান্ত মিত্রমজুমদার বংশে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
দক্ষিনারঞ্জনের পরিবারের আদিবাস ছিল বরিশাল জেলার বাকলা মহকুমা অন্তর্গত চন্দ্রদ্বীপ গ্রামে।তার ধমনীতে প্রবাহিত ছিল প্রাচীন বাংলার রাজবংশের রক্তধারা। দক্ষিনারঞ্জনের পিতা রমদারঞ্জন মিত্র মজুমদার ও মাতা কুসুমময়ী।রমদারঞ্জন ছিলেন একজন স্বভাব কবি, নানা শাস্ত্রে তিনি ছিলেন ব্যুৎপন্ন।শৈশবে পিতার মাধ্যমেই সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ওঠেন দক্ষিনারঞ্জন। পিতা মাতার একমাত্র সন্তান দক্ষিনারঞ্জনের গদবাধা লেখা পড়ার প্রতি তেমন মন ছিল না তাই একটু বেশি বয়সেই তার স্কুলে যাওয়া।১৮৮৬ সালে যখন দক্ষিনারঞ্জনের বয়স মাত্র ৯ বছর তখন তার মা মৃত্যুবরণ করেন।
১৮৮৭ সালে দশ বছর বয়সে তাকে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেয়া হয় ঢাকার কিশোরী মহন হাই স্কুলে পরবর্তীতে বিভিন্ন স্কুল পরিবর্তন করে সর্বশেষ ১৮৯৮ সালে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর হাইস্কুলে প্রথম বিভাগে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তাকে বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজে এফএ ক্লাসে ভর্তি করানো হয়।১৯২০ সালে পিতা রমদারঞ্জন মারা যান।
দক্ষিনারঞ্জনের ধরাবাধা পড়া-লেখার প্রতি অনিহা ও পিতার মৃত্যুর কারনে পিসিমার সাথে মুর্শিদাবাদ ত্যাগ করে টাঙ্গাইল চলে যাওয়ায় তার প্রাতিষ্ঠানিক পড়া লেখার সমাপ্তি ঘটে।কিন্তু পিতার সমৃদ্ধ পাঠাগার তাকে সাহিত্য চর্চায় চরম আকর্ষিত করত।

১৯০১ সালে দক্ষিনারঞ্জনের সম্পাদিত মাসিক সুধা পত্রিকা প্রকাশিত হয়। চার বছর ধরে গোটা বিশেক সংখ্যা প্রকাশিত হয়।দক্ষিনারঞ্জনের প্রথম গ্রন্থ ‘উত্থান’ কাব্য প্রকাশিত হয় ১৯০২ সালে। উত্থান এবং ঠাকুরমার ঝুলি(১৯০৭) ছাড়া তার যে সব বই বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য সেগুলো হলো, মা- বাবা আহুতি, ঠাকুরদাদার ঝুলি,চারু -হারু,দাদা মশায়ের থলে,খোকা খুকুর খেলা,আমালবই,সরলচন্ডী,পূজার কথা,ফার্স্টবয়,উৎপল ও রবি,কিশোরদের মন, কর্মের মূর্তি, বাংলার সোনার ছেলে,সবুজ লেখা,চিরদিনের রুপকথা, আাশীর্বাদ, আশীর্বানী ইত্যাদি। তার প্রতিটি বই ‘ই বাংলা সাহিত্যের অক্ষয় সম্পদ।
সাহিত্য জীবন ‘ই মূলত তার কর্মজীবন ছিল। সারা জীবন ‘ই তিনি লোক সাহিত্য সংগ্রহ, সম্পাদনা করেছেন।দক্ষিনারঞ্জনের প্রতিভার আর দুটি বৈশিষ্ট্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, তিনি খুব ভালো ছবি আঁকতেন। নিজের বই এর ছবি এবং প্রচ্ছদ গুলো সব সময় তিনি নিজেই আঁকতেন। দক্ষিনারঞ্জন ছিলেন একজন অসাধারণ দারুশিল্পি। কলকাতার পূর্নদাস রোডে তার যে বাসভবন, সেখানকার দরজা-জানালার কাঠের শিল্পকর্ম তিনি নিজের হাতেই করেছেন।
১৯০৮ সালে বিক্রমপুরের মালাখানগরের বসু পরিবারের কন্যা গিরিবালা দেবীর সাথে দক্ষিনারঞ্জন পরিণয় সুত্রে আবদ্ধ হন।দক্ষিনারঞ্জন ও গিরিবালার ঘরে জন্ম গ্রহন করেন ১১জন সন্তান। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০ মার্চ বাংলা ১৩৬৩ সালের ১৬ই চৈত্রই
দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার আশি বছর বয়সে কলকাতার নিজ বাসভবন ‘সাহিত্যাশ্রম’ এ চিরনিদ্রায় শায়িত হন।

দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার বাংলা সাহিত্যের এক কিংবদন্তী পুরুষ। এদেশের কিশোর-কিশোরীদের স্বপ্নমুখী, সাহিত্যমুখী এবং জীবনমুখী করার ক্ষেত্রে তিনি পালন করেছেন অবিস্মরণীয় ভূমিকা।
দক্ষিনারঞ্জনের শেকরের সন্ধান আসলে আমাদের সাভারবাসীর ঐতিহ্যের অনুসন্ধান তথা বাঙালির ঐতিহ্যের অনুসন্ধান।এই শেকড় গভীর থেকে গভীরতর
স্তরে গথিত।তাই এর অনুসন্ধান কখনওই শেষ হবার নয়,যেখানেই শেষ হবে সেখান থেকেই আবার শুরু করতে হবে এবং নিরলস ভাবে তা চালিয়ে যেতে হবে।তার এই অনুসন্ধান হবে আমাদের নিজেদের জানার প্রক্রিয়ার’ই একটি অংশ।

(বিশ্বজিৎ ঘোষ ও কালি প্রসন্ন দাস এর লেখা হতে সংকলিত)

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© All rights reserved © 2022 Bongo Journal 24
Theme Customized By Shakil IT Park