ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় সংখ্যালঘুর উপর যুবলীগ নেতার হামলা মামলার বাদী আহত রিদু শীলের স্ত্রী শবিতা শীলকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন এজাহারভূক্ত প্রধান আসামী উপজেলা যুবলীগ নেতা কাউছার মিয়া। এমন উদ্ভট পরিস্থিতিতে এলাকার সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এমন আতঙ্কে অনিশ্চিত হয়ে গেছে হিন্দু সমাজের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা উদযাপনের। বিভিন্ন মহলের নিন্দাও প্রকাশ করেছেন। এমন কি প্রশাসনের নীরব ভূমিকার সমালোচনাও করেছেন বিভিন্ন সামাজিক মহল।
গত ৩ অক্টোবর সোমবার এমনই লিখিত অভিযোগ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হাজির হয়েছেন উপজেলার হিন্দু সমাজের নেতৃবৃন্দ। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কুখ্যাত চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, লাঠিয়াল প্রকৃতির লোক উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউছার মিয়া। দলের পদবী ব্যবহার করে সরকার দলের প্রভাব খাটিয়ে মামলার সঠিক তদন্ত রিপোর্টে প্রভাবিত করে আসছে। যার কারণে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সঠিক তদন্ত রিপোর্ট প্রদান না করে তদন্ত কর্মকর্তা উল্টো আমার সাথে অশোভন আচরণ করে আসছে যা কোন রকমেই কাম্য নয়। তদন্ত কর্মকর্তার উদাসীন ও অবহেলার কারণে প্রধান আসামী যুবলীগ নেতা কাউছার মিয়া প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাকে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগসহ হুমকি ধমকি দিচ্ছে। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, মামলার প্রধান আসামী কাউছার মিয়া তার বিজয়নগর উপজেলার সকল নেতাকর্মীদের নিয়ে থানা ঘেরাও করে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ-কে বদলীর মিছিল করেছে। প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণে মামলার বাদী তদন্তে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হওয়ার আশঙ্কায় তদন্ত তদারকীর উপর অনস্থা প্রকাশ করে সিআইডিতে মামলাটি বদলীর আকাঙ্খা প্রকাশ করেছেন। উল্লেখিত আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বরাবরও পাঠিয়েছেন বলে মামলার বাদী বিষয়টি জানিয়েছেন।
বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান জানান, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আইন আইনের গতিতে চলবে। যারা অপরাধী তাদের শাস্তি হোক সেটা আমরা চাই। বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করা সম্ভব নয়।
বিজয়নগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম মাস্টার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, থানা ঘেরাও বা মামলাটি প্রভাবিত করার মত দুঃসাহস কেউ করেনি। এমন সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা আমাদের উর্দ্ধতন নেতাদের বিষয়টি জানিয়েছি। তারাও বলেছেন আইন অনুযায়ী যা হবে আমরা তার পক্ষেই আছি।
এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বিজয়নগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমরা এজাহারভূক্ত সাগর মিয়া নামে একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য গত ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় আলাদাউদপুরে আহত রিদু শীলের দোকানে যুবলীগ নেতা কাউছারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে রিদু শীলকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে দোকান লুটপাট করে নগদ অর্থ ও মালামাল নিয়ে যায়।